বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ‘বাংলাওয়াশ’ করে টাইগারদের সিরিজ জয়

SHARE

কি অসাধারণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ! যে ম্যাচটি হেসেখেলেই বের করে নিয়ে আসছিলেন ডেভিড মালান আর জস বাটলার। সেই ম্যাচে পাশার দান একেবারে উল্টে দিলো সাকিব আল হাসানের দল। রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে শেষ ওভারে ১৬ রানে ইংল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ৩-০ ব্যবধানে বাংলাওয়াশ করেই ছাড়লো সাকিব বাহিনী।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল এবার ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলার। মিরপুরে এমন এক সহজ সমীকরণের লড়াইয়ে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় স্বাগতিকরা। ওপেনার লিটন কুমার দাসের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে উইকেট ২ হারিয়ে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় সাকিব আল হাসানের দল। মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪২ রানে থামে ইংলিশদের ইনিংস। ফলে ১৬ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ।
প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতলেও এদিন টস হারেন সাকিব আল হাসান। তার দল শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে। ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার ৭.৩ ওভারে ৫৫ রানের জুটি দেন। আট বছর পর দলে ফেরা রনি সাজঘরে ফিরে যাওয়ার আগে তিন চারের শটে ২৪ রান করেন।

এরপর লিটন দাস ও তিনে নামা নাজমুল শান্ত গড়েন ৮৪ রানের জুটি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও প্রথম দুই টি-২০ ম্যাচে রান না পাওয়া লিটন ৫৭ বলে খেলেন ৭৩ রানের দারুণ ইনিংস। তিনি ১০টি চার ও একটি ছক্কার শট মারেন। তিনে নামা শান্ত প্রথম দুই ম্যাচে দলকে জেতানো ইনিংস খেলার পর এদিন ৩৬ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তাদের ব্যাটে মাত্র ২ উইকেট হারালেও ১৫৮ রানে আটকে যায় বাংলাদেশ।

জবাব দিতে নেমে অভিষেক হওয়া বাংলাদেশ স্পিনার তানভীর ইসলাম ইনিংসের প্রথম ওভারেই ব্রেক থ্রু দেন। ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্টকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। এরপর ডেভিড মালান ও তিনে নামা জস বাটলার দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যাচ বের করে নিচ্ছিলেন। তারা ৯৫ রানের জুটি গড়ার পর ১৪তম ওভারে এসে ব্রেক থ্রু দেন মুস্তাফিজুর রহমান।

তিনি ওভারের প্রথম বলে আউট করেন ৪৭ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারের শটে ৫৩ রান করা মালানকে। পরের বলেই রান আউট কাটা পড়েন ৩১ বলে ৪০ রান করা অধিনায়ক বাটলার। তিনি চারটি চার ও একটি ছক্কা দেখান।
টি-২০ ক্রিকেটে একশ’ উইকেট নিয়েছেন ফিজ।
টি-২০ ক্রিকেটে একশ’ উইকেট নিয়েছেন ফিজ।
এরপর ১৭তম ওভারে মঈন আলী ও বেন ডাকেটকে তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ২৩ রানের মধ্যে চার উইকেট নিয়ে কামব্যাক করে টাইগাররা। শেষে ক্রিস ওকস ১৩ রান করলেও তা ইংল্যান্ডের লজ্জা এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। মুস্তাফিজ এক উইকেট পেলেও শেষ এই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়েছেন তিনি। ওই এক উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ষষ্ঠ বোলার হিসেবে টি-২০’তে একশ’ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন। সাকিব ও হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে যথাক্রমে ৩০ ও ২৯ রান দিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৮/২ (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*; কারান ৪-০-২৮-০, ওকস ১-০-১২-০, রশিদ ৪-০-২৩-১, আর্চার ৪-০-৩৩-০, রেহান ৩-০-২৬-০, মইন ১-০-১২-০, জর্ডান ৩-০-২১-১)
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪২/৬ (মালান ৫৩, সল্ট ০, বাটলার ৪০, ডাকেট ১১, মইন ৯, কারান ৪, ওকস ১৩*, জর্ডান ২*; তানভির ২-০-১৭-১, তাসকিন ৪-০-২৬-২, সাকিব ৪-০-৩০-১, হাসান ৪-০-২৯-০, মুস্তাফিজ ৪-০-১৪-১, মিরাজ ২-০-১৮-০)
ফল: বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩-০তে জয়ী বাংলাদেশ
ম্যাচ সেরা: লিটন দাস (বাংলাদেশ)
সিরিজ সেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ)