রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : তদন্ত কমিটি

SHARE

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার কারণ ব্যাখ্যার পাশাপাশি ১০টি সুপারিশও করা হয়েছে।

রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মো. আবু সুফিয়ান।

তিনি জানান, ৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন প্রমাণপত্র হিসেবে ৭৪টি পৃষ্ঠা সংযুক্ত করা হয়েছে। ৩ দিনের তদন্তে অনন্ত ৭৫ জনের স্বাক্ষ্য নিয়েছে। রোহিঙ্গারা বলছে, এটি পরিকল্পিত নাশকতা। এসব রোহিঙ্গারা যে স্বাক্ষ্য দিয়েছে তাতে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য এবং ভিন্ন ভিন্ন নাম পাওয়া গেছে। এদের শনাক্ত করা কঠিন। তাই মামলার মাধ্যমে এ ঘটনার অধিকতর তদন্ত জরুরি।

তদন্ত কমিটির প্রধান আবু সুফিয়ান বলেন, দুপুর আড়াই টায় ১১ নম্বর ক্যাম্পের ‘ডি’-ব্লকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে কয়েকটি স্থানে আগুন লাগে। এটা নাশকতার প্রমাণ করে। অগ্নিকাণ্ডের আগের দিন ওই ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গারা আগুন নেভাতে গেলে অনেকেই নিষেধ করেছে, তবে তা রোহিঙ্গাদের প্রাণ বাঁচানোর স্বার্থে। রোহিঙ্গাদের বলা হয়েছে, আগুন নেভানোর চেয়ে জীবন বাঁচানো জরুরি।

তদন্ত কমিটি জানায়, ওই দিনের আগুনে ২ হাজার ২০০ ঘর পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। আর আহত হয় প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা।

প্রতিবেদনে করা সুপারিশগুলো হলো— রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিটি ব্লকের রাস্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল করতে পারার মতো প্রশস্ত করা যেতে পারে, রাস্তার পাশে পানির চৌবাচ্চা তৈরি, শেল্টারে ত্রিপলের পরিবর্তে আগুন সহিঞ্চু কিছু ব্যবহার, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য পৃথক ফায়ার সার্ভিস ইউনিট গঠন, ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যতত্রত বাজার বসাতে না দেওয়া এবং বড় রাস্তার ধারব্যতীত অন্যস্থানে দাহ্য পদার্থ আউটলেট করা থেকে বিরত থাকা, ঘনবসতিপূর্ণ ও অনেক স্থানে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে অগম্য বিবেচনায় ক্যাম্পের প্রবেশ মুখে লে-আউট স্থাপন, আগুন লাগলে নেভানোর কাজে রোহিঙ্গাদের স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহণের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরি। ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে ওয়ারলেস টাওয়ার স্থাপন ও ৩৬০ ডিগ্রি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, এক ক্যাম্প থেকে অপরাধ করে অন্য ক্যাম্পের পালানো রোধে প্রত্যেক ক্যাম্পে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করা।