একরোখা জীবনে ফুলস্টপ দিয়েছে ছোট্ট রঙ্গন : আসিফ

SHARE

গত বছরই মেয়ের বাবা হয়েছেন বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। মেয়ের নাম রেখেছেন আইদাহ্ আসিফ রঙ্গন। তাকে ঘিরেই মেতে আছেন এ গায়ক। প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়ের ছবি শেয়ার করে নানান অভিজ্ঞতা ও নিজের পরিবর্তনের দিকগুলো তুলে ধরেন তিনি।

শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে মেয়েকে কোলে নিয়ে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেছেন আসিফ। তিনি লিখেছেন, একান্নো বছরে এসে এখন আইদাহ্’র জন্য আরও বাঁচতে ইচ্ছে করে, হায়াতের মালিক আল্লাহ। সব নির্দিষ্ট জেনেও এই আকুতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই কোনো বাবার। দুনিয়ার হাটবাজারে লোভ, স্বার্থ, পরচর্চায় ব্যস্ত থেকে মানবজীবনের মর্ম বোঝা সহজ কাজ নয়। তবুও আমরা অন্যকে ঠকানো বা ছোট করার মিশনে ব্যস্ত। আত্মপোলদ্ধির সময় ক্রমশ শেষ হয়ে আসে, দুনিয়ার কাজ বাকি থেকে যায়। মেয়ের বাবা আর বাবার মেয়ে সম্পর্কটা খুব অদ্ভূত রকমের শক্তিশালী। আমার একরোখা জীবনে ফুলস্টপ দিয়ে দিয়েছে ছোট্ট রঙ্গন, বদলে ফেলেছি নিজেকে। টরন্টোতে বড় ছেলের সঙ্গে প্রতিদিনই ম্যাসেজে কথোপকথন হয়, ছোটজনও যথেস্ট দায়িত্বশীল। তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই আমার।

আসিফ জানান, অনেক দিন পর কুমিল্লা গিয়ে বেশ কয়েক দিন থাকলাম। বন্ধু মাসুদ আলীর প্রয়াণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত আমরা। ঢাকার সব কাজ বন্ধ করে আড্ডার বন্ধুদের সঙ্গে সময়টা কাটানো ছিল এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি খোঁজা। মন খারাপের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাওয়াটা কারও জন্যই সুখকর নয়। একসঙ্গে থাকতে পারলে অনেক শেয়ারিং হয়, অনিবার্য কষ্টবোধ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।

গায়কের ভাষ্য, ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি পরিবারে কোনো মুরুব্বি মারা গেলে সিনিয়র সদস্যরা সবাইকে নিয়ে বসে অতীতের মজার সুখের সংগ্রামের গল্প করতেন। সেখানে উপস্থিত মনযোগী কয়েক প্রজন্ম সেই গল্পগুলোকে নিজেদের পরবর্তী জীবনে পথ চলার দীক্ষা হিসেবে নিতে পারে।

তিনি জানান, গতকাল দুপুরে ড্রাইভ করে ঢাকায় ফিরেছি। সামনের সিটে ছোট্ট রঙ্গন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে তার মায়ের কোলে। পেছনের সিটে রঙ্গনের কেয়ারটেকার সাহারাও ঘুমে নিমগ্ন। বেগমের সতর্ক চোখও বুঁজে আসছে খানিক পরপর, সে জানে চালকের পাশের সিটে ঘুমিয়ে যাওয়া অপরাধ। হাইওয়েতে গাড়ি চলছে আস্তে-ধীরেই। আমার মাথায় বিগত জীবনের স্মৃতিগুলোর ফ্ল্যাশব্যাক হচ্ছে কোটি কোটি মাইল স্পিডে। এই দুনিয়ায় এসে কাটিয়ে দেওয়া সময়গুলোর রোমন্থনে মন আজ শান্ত। অনেক পাওয়া আর হারানোর অসীম হিসেব নিকেশ থেকে মুক্ত। পরিবারের সদস্যদের নিশ্চিন্তে ঘুমানোর ব্যবস্থা করতে পারাটাই প্রতিটি বাবার জীবনের আসল প্রশান্তি। দুনিয়ার হাজারো কঠিন বাস্তবতা সেখানে হার মেনে যায়।

সবশেষে আসিফ লিখেছেন, মাসুদ আলীর পথচলা থেমে গেছে। তার স্ত্রী আর দুটো শিশু মেয়ের দিন এখন কাটছে কীভাবে! এই উৎকণ্ঠার মাঝেই আমার পৃথিবী ঘুরছে রঙ্গনের কক্ষপথে। পৃথিবীর সব রঙ্গনই খুব মায়াবতী, আমার রঙ্গনও ঠিক তেমনই। ভালোবাসা অবিরাম।