বাংলাদেশে এডিস মশা ছিল না, ফ্লাইটে আসতে পারে : তাজুল ইসলাম

SHARE

তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে এডিস মশা ছিল না। ফ্লাইটে করে হয়তো এই মশা আমাদের দেশে আসতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে তো এডিশ মশা ছিল না, ডেঙ্গু রোগ ছিল না। এটাতো বাইরে থেকে আসছে। ফ্লাইটে করে প্যাসেঞ্জার আসছিল, অথবা দুটি মশা আসছে। এগুলো কোনো না কোনো বাহিত (ডেঙ্গু) ছিল, তারা আরও মশা প্রজনন করেছে।
আজ রোববার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চলতি বছরের ৫ম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম হলেও অস্বস্তিতে রয়েছেন তারা।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের আগে আমাদের দেশে ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা দেখা যায়নি। যে কারণে এ বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব বেশি ছিল না। সে অভিজ্ঞতা আমরা সংগ্রহ করেছি এবং কী কী খাতে আমাদের ইন্টারভেনশন দরকার বা কী কী আউটপুট দরকার সে বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে ২০২০ সালে আমরা মোটামুটি সফলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিলাম। ২০২১ সালে ২০ হাজারের মতো আক্রান্ত হয়। কিছু মৃত্যু হয়। এখন ২০২২ সাল। এই ২০২২ সালে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা আমাদের সমসাময়িক দেশগুলোতে মারাত্মকভাবে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
তিনি বলেন, সাধারণ আমরা সেপ্টেম্বরের পর থেকে ডেঙ্গু নিম্নগামী হয় এটা আমরা লক্ষ্য করেছি। প্রতিটি দেশে ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে এই রোগের একটা সম্পৃক্ততা আমরা দেখেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনও এটা নিম্নগামী না।
মশার জন্য কোনো বর্ডার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থার থেকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অনেকের অবস্থা এর থেকে অনেক ভয়াবহ। ভারতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় দুই লাখের মতো আক্রান্ত। বিশেষ করে কলকাতায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি।
মন্ত্রী বলেন, ১ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত। আমার মনে হয় এই সংখ্যাটা এখন অনেক বেড়েছে। মালয়েশিয়ায় ৩৭ হাজার ৯৫০ জন। ইন্দোনেশিয়ায় ৯৪ হাজার ৩৫৫ জন। ফিলিপাইনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫০ জন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত (২৬ অক্টোবর) ৩৩ হাজার ৯২৩ জন। এটা আমাদের কাছে স্বস্তিদায়ক না।
তাজুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যেমন সিঙ্গাপুরে মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখের মতো। সে দিক থেকে এবং মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের থেকে আমাদের দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি। তা সত্ত্বেও এবং আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ভাইরাস ছড়ানোর জন্য বড় কারণ। এটা তো মশাবাহিত ভাইরাস। সে কারণে যদি ওই ফিগার দেখি তাহলে আমাদের সফল বলতে হবে। কিন্তু আমি এটাকে সফল বলবো না। আমাদের টার্গেট ছিল ২০২০ সালে যে দুই হাজার হয়েছিল, তার থেকে আরও নিচে নামিয়ে আনার। এখানে আমাদের মেয়র সাহেবরা কাজ করেনি অথবা আমরা অনুপস্থিত ছিলাম মনিটরিং করতে বিষয়টি তেমন না।
তিনি বলেন, মশা নিধনের জন্য যেসব উপকরণ লাগবে, মশা মারার জন্য যে ওষুধ লাগবে তা বছরের শুরুতে সংগ্রহ করা হয়। তারপর যে মেশিন লাগবে উনারা (মেয়ররা) সংগ্রহ করেন। তারপর লোকবল লাগবে ৩ হাজার করে, উনাদের লোকবল দেওয়া হয়েছে এবং এ জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই কোটি, পাঁচ কোটি করে আমি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, মশার ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে এক ধরনের মনোপলি ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা মনোপলি ভেঙেছি। আমাদের যে সমস্ত প্রক্রিয়া হাতে আছে, সেগুলো আমরা করেছি।
ডেঙ্গু নির্মূল করার পথ কি আপনাদের কাছে নেই– এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলেই তো অবস্থাটা অন্য দেশের তুলনায় ভালো। তাদের দেশেও তো ছিল না। এটা ইউরোপে ছিল। ফ্রান্সে দেখা গেছে যে একদিনে ৭-৮ হাজার লোক মারা গেছে। এ রকম তথ্য আছে আমাদের কাছে।
তিনি বলেন, এটা আমি বলছি যে হয়তো কোনও কারণে আসতে পারে। যেমন আমাদের হয়তো কোনও প্যাসেঞ্জার আসছে, হয়তো কোভিডযুক্ত, তাকে আইডেন্টিফাই করা যায়নি। অথবা কেউ জানে না সে এসে নিজে সুস্থ ছিল, কিন্তু রোগী সৃষ্টি করেছে। তেমনিভাবে ফ্লাইটে করে একটি মশা আসতে পারে।