ঢাকায় রোড সেফটির মাস্টারপ্ল্যান করে দেবে ব্লুমবার্গ : আতিক

SHARE

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকা শহরে রোড সেফটির জন্য প্রয়োজনীয় রিসার্চ করে একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হবে। এর জন্য যত খরচ হবে সব আর্থিক এবং অর্থনৈতিক ডেটা সফটওয়্যার সংস্থা ব্লুমবার্গ দেবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।
আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে সি৪০ সিটিস সম্মেলন ও ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস অ্যাওয়ার্ড-২০২২ অর্জন বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিদিন ঢাকা শহরে দুই হাজার মানুষ আসেন। তাই জলবায়ু উদ্বাস্তু ফান্ডের ৫০ শতাংশ নগরের জন্য বরাদ্দ করতে হবে; গ্রিন জব তৈরি করতে হবে এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য স্বল্প খরচে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, তেজগাঁওয়ের ৬ হাজার ৫০০টি ট্রাক রাখার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ডিটেল এরিয়া প্ল্যানের মধ্যে দেখাতে হবে। এই ট্রাকগুলো আমি ফেলে দিতে বা উধাও করতেও পারব না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলাপ করছি, সেখানে কোনো স্থায়ী শেড করতে পারি কী না। এর জন্য তেজগাঁয়ে বিটিসিএলের কাছে থাকা জায়গা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। রেলের কাছেও জায়গা চাইব। আজকে ঢাকা শহরের জায়গা আছে রাজউক, হাউজিং, সিভিল এভিয়েশন, রেলওয়ে না হলে পিডব্লিউডিএর। ঢাকা সিটিতে সিটি করপোরেশনের কোনো জায়গা নেই।
মেয়র আতিক বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনাল দরকার ছিল সিটি বাস সার্ভিসের জন্য, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের জন্য না। যখন প্ল্যান করা হয় তখন আমরা খুব শর্ট টার্ম প্ল্যান করি, লং টার্ম ভিশনে যেতে পারছি না এটাই আমাদের সমস্যা। আজকে যদি মহাখালী, গাবতলী, সায়দাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস স্ট্যান্ডকে বলা হতো যে অনলি ফর ইন্টারসিটি, তাহলে কিন্তু আজকের সিটিটা এতো খারাপ হয় না। আজকে বগুড়া থেকে বাস আসছে, ময়মনসিংহ থেকে বাস আসছে। এই বাসগুলো সিটির ভেতরে মহাখালীতে যায়। এটি হবে না। এটির জন্য অলরেডি প্ল্যান করেছি। এটার জন্য একটা মাস্টার প্ল্যান আমাদের করতে হচ্ছে।
মূলত স্থিতিস্থাপক তৈরি করতে ঐক্যবদ্ধ ক্যাটাগরিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস অ্যাওয়ার্ড ২০২২ পুরস্কার লাভ করে ডিএনসিসি। গত ১৯ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্সে সি৪০ এর সম্মেলনে সি৪০ সিটির চেয়ারম্যান ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এ পুরস্কার তুলে দেন ডিএসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের হাতে।
উন্মুক্ত স্থানগুলোর আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন প্রকল্পের আওতায় ১৮টি পার্ক, ৪টি খেলার মাঠ, ৫০টি নতুন পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও ২৩টি বিদ্যমান পাবলিক টয়লেটের উন্নয়ন, দুটি কবরস্থানে উন্নয়ন এবং একটি পশু জবাইখানা উন্নয়ন কার্যক্রম এই পুরস্কারপ্রাপ্তিতে ভূমিকা রেখেছে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, সি৪০ সম্মেলনে ব্লুমবার্গ ফ্রিল্যানথ্রপি থেকে আমরা যে পুরস্কার পেয়েছি তা হচ্ছে জলবায়ুর স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে ভূমিকা রাখার জন্য। মোট পাঁচটি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পুরস্কার পেয়েছি ইউনাইটেড ইন বিল্ডিং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ক্যাটাগরিতে।
মেয়র জানান, আরও যেসব ক্যাটাগরিতে সি ফরটি সম্মেলনে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে-জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবন, বায়ু পরিষ্কারকরণ ও জলবায়ু আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ। এ সম্মেলনে মোট ১১ শহরকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কাজের জন্য। মেয়র জানান, ব্লুমবার্গ ফ্রিল্যানথ্রপি বিশ্বের ১৭৩টি দেশের ৯৪১টি শহরকে নিয়ে কাজ করে।
মেয়র আতিকুল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা শহরে মাঠ ও পার্ক উন্নয়নের মাধ্যমে সবুজ বলয় তৈরি করেছি। আমরা এগুলো তৈরি করার সময় শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও নারীদের চাহিদা জানতে চেয়েছি এবং এ উপকরণগুলো মাঠ ও পার্কে ব্যবস্থা করেছি। আমরা এ পার্কগুলো উদ্বোধন করার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমার কাছে আমন্ত্রণ আসতে শুরু করেছে। তারা জানতে চাচ্ছে তোমরা কীভাবে বিশ্বের এ রকম একটি ব্যস্ততম শহরের মধ্যে এতগুলো পার্ক করলে যেখানে জমির দাম অনেক বেশি।
তিনি জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে কি নোট স্পিকার হিসেবে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপপ্রধান প্রকৌশলী ড. তারিক বিন ইউসুফ।