সেবার মানভেদে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে শ্রেণিভুক্ত করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

SHARE

দেশে নানা ব্যাধি নিয়ে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেশির ভাগ রোগী ছোটেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। যেখানে নিজেদের মতো করে প্রতিটি অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে ওষুধের দাম নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানগুলো। চিকিৎসার মান অনুযায়ী সরকারিভাবে ক্যাটাগরি (শ্রেণি) ভিত্তিক কোনো নীতিমালা না থাকায় যেনতেনভাবে চলছে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
তবে এসব প্রতিষ্ঠানকে নিয়মের মধ্যে আনতে শ্রেণি পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে করে দাম নির্ধারণ সহজ হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালে ফি নির্ধারণী সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ক্যাটেগরাইজড (শ্রেণিভুক্ত) করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দিচ্ছি। মান অনুযায়ী এ, বি ও সি (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারি) ক্যাটাগরি হিসেবে থাকবে। যে হাসপাতালের যে সক্ষমতা আছে সেই সক্ষমতার বাইরে ওই হাসপাতাল চিকিৎসা দিতে পারবে না। যে হাসপাতালের সিজার করার বা হার্টের চিকিৎসা করার যন্ত্রপাতি নাই সে হাসপাতাল ওই চিকিৎসা দেওয়া মানেই রোগীর জীবন সংকটাপন্ন করা। এ জন্যই হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসা সেবার মান অনুযায়ী শ্রেণিভুক্তকরণসহ সঠিক ফি নির্ধারণ করে দিতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে।’
ইচ্ছেমতো ফি নির্ধারণ করায় চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের বেসরকারি মেডিকেল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর একেকটির জন্য একেক রকম ফি থাকায় দেশের মানুষের চিকিৎসার ব্যয়ভার বেড়ে গেছে। এক হাসপাতালে ফি ১০ হাজার টাকা হলে, অন্য হাসপাতালে বিল ওঠে ৫০ হাজার টাকা বা ১ লাখ টাকা। এতে দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটি চলতে পারে না। আমরা আগেও বেসরকারি হাসপাতালের ফি নির্ধারণ করা নিয়ে সভা করেছি।’
এর আগে সকালে অন্য একটি বৈঠকে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানোন্নয়নে প্রাইমারি স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে সভায় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, স্কুল-কলেজের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রাইমারি হেলথ কেয়ার গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলের পল্লি চিকিৎসকেরা যত্রতত্র এবং অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক বা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ লিখে গ্রামের সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছেন মন্তব্য করে জাহিদ মালেক বলেন, কোনোরকম সরকারি অনুমোদন না নিয়েই গ্রামে অগণিত চিকিৎসক তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চিকিৎসার পরিবর্তে ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকবে। তাই অবিলম্বে সরকারি নিবন্ধন ছাড়া ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার পাশাপাশি সরকারি অনুমোদন ও সার্টিফিকেটবিহীন গ্রাম্য চিকিৎসকদের চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হবে।