অংশগ্রহণমূলক না হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নেই : সিইসি

SHARE

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ব্যালটের প্রয়োজন পড়বে কি না সে নিশ্চয়তা নেই। আমরা প্রথমেই বলেছি আপনারা (রাজনৈতিক দল) সবাই এসে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করুন। অংশগ্রহণ করে নির্বাচনকে ফলপ্রসূ করুন, যাতে নির্বাচন সুন্দর হয়, জনমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। জাতীয় নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় তবে ইভিএম কিংবা ব্যালট পেপার কোনোটাতেই সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নেই।

আজ মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন। ইএমএফের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলীর নেতৃত্বে সংগঠনটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়।

সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে (জনমনে) যেসব পারসেপশন আছে, সেই সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন তারা। উনারা বলেছেন ইভিএম নিয়েও তারা কাজ করেন। ইভিএম নিয়ে যে নেগেটিভ পারসেপশন বিরাজ করছে সেটাকে দূরীভূত করার জন্য উনারা সচেষ্ট আছেন। এ জন্য উনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ এটা ডিপেন্ড করবে যদি সরকার এ প্রকল্প অনুমোদন করেন। এর আর্থিক সংশ্লিষ্টতা যেটা আছে সেটা যদি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতে যথার্থ মনে না হয় তাহলে সরকার এ ধরনের প্রজেক্ট অ্যালাউ নাও করতে পারে।

বর্তমান কমিশন বিচার বিশ্লেষণ ও মতামত নিয়ে ইভিএম সম্পর্কে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্তব্য করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা এসেই কিন্তু ইভিএমকে সমর্থন করিনি। আমাদের তরফ থেকে ইভিএম নিয়ে যে বিচার বিশ্লেষণগুলো করেছি, আমাদের ছয় মাস হয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে আমরা যন্ত্রটাকে বোঝার চেষ্টা করেছি এবং ব্যাপক আলোচনা করেছি। ব্যাপক অংশগ্রহণও হয়েছে ইভিএম সস্পর্কে। এর মাধ্যমে ম্যানিপুলেশন হয় এমন কেউ দেখাতে পারেনি। বলাতে পারিনি। এখন প্রকাশ্যে সবাই বলছেন অ্যাটলিস্ট ইভিএম দিয়ে হ্যাকিং সম্ভব নয়। এই ধারণাও আগে ছিল না যে এটা একটা স্টান্ড অ্যালোন মেশিন। হ্যাকিং যে সম্ভব নয় এই ধারণাও আগে ছিল না, এখন হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা উনাদের বলেছি আপনারা আপনাদের কাজ করে যান। আমরা আপনাদের কোনো কাজে অংশ নিতে পারব না। এটা সম্ভব নয়। উনারাও আমাদের বলেছেন আপনারা ইভিএম নিয়ে কোনো প্রচারণা করছেন না। আমরা বলেছি এটা আমরা দেখব। আমরা ইভিএম ব্যবহার করবো। যদি ইভিএম ব্যবহার করি তার জন্য ভোটার এডুকেশনের একটা প্ল্যান আমাদের আছে। আমরা এখনো শুরু করিনি। হয়তো শুরু করব।

সিইসি আরও বলেন, উনারা একটা বিষয়ে বলতে চেয়েছেন আমাদের এখানে হয়তো বিদেশি ডিপ্লোম্যাটরা আসেন। উনারা জানতে চেয়েছেন ডিপ্লোম্যাটরা আমাদের প্রভাবিত করেন কিনা। আমি বলেছি উনারা ডিপ্লোম্যাট। উনারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। নির্বাচন নিয়ে প্রভাবিত করার মতো কোনও কথা কখনও বলেননি এবং বলবেনও না। আমাদের সঙ্গে অন্তত বলবেন না। উনারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশের আগামী ইলেকশনটা সুন্দর হবে। অংশগ্রহণমূলক হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা শুধু আমাদের সঙ্গেই নয়, এর আগে যারা ইলেকশন কমিশন ছিল তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এটা এক ধরনের সৌজন্যে সাক্ষাৎকার। এজন্য উনারা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন। এ বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করেছি।

তিনি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা অনেক সময় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। কোনও অ্যাসিস্টেন্ট লাগবে কিনা জানতে চান। তবে আমরা এখনও তাদের এ ধরনের কোনও প্রস্তাব দেইনি যে আপনাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট আমাদের প্রয়োজন হবে।