ইসির ৮৫ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত

SHARE

উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্তভাবে চাকরি হারালেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৮৫ জন কর্মকর্তা। ২০০৫ সালে চার দলীয় জোট সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া এবং ২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মূল্যায়ন পরীক্ষার পর নিয়োগ বাতিল হওয়া সেই ৮৫ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের আদেশ চূড়ান্তভাবে বাতিল করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তাদের চাকরি পুনর্বহালের ২০১০ সালের আদেশটি বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি।

ইসির জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের ২৬ সেপ্টেম্বর (সোমবার) স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, আপিল বিভাগের সিভিল আপিল নং ২১/২০১১, ২২/২০১১, ২৩/২০১১ ও ২৪/২০১১ এর ১-৯-২০২২ তারিখের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ১৩ মে ২০১০ তারিখের নিকস/থাঃপ্রঃ/কর্ম/অবঃপুনঃ নিয়োগ/৩(২৫)/২০১০/১৮১ নং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশটি এতদ্বারা নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েরর সিনিয়র সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ৩২০ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। দলীয় বিবেচনায় এই নিয়োগ হওয়ার সমালোচনা উঠলেও তৎকালীন এমএ আজিজ কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এরপর ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে এক প্রতিবেদনে ওই কর্মকর্তাদের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে জাতীয় নির্বাচন যাতে প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়, সেজন্য ইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। তার ভিত্তিতে সেনাসমর্থিত সময়কার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন শিক্ষানবিশকালেই ৩২০ কর্মকর্তার যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়। এতে অনুত্তীর্ণ ৮৫ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হয়। পরে তারা আদালতে গেলে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালত ২০১০ সালে ১২ এপ্রিল তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলেন নির্বাচন কমিশনকে।

সেই আদেশ বলে নির্বাচন কমিশন ২০১০ সালের ১৩ মে ৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চারটি লিভ টু আপিল করে। পরে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারক ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন এবং আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য পাঠান। এরপর ২০১১ সালে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আপিল করে। শুনানির পর গত ১ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালের প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালতের আদেশ বাতিল করে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসিও আগের আদেশটি বাতিল করল। ফলে সেই ৮৫ কর্মকর্তার চাকরিতে পুনর্বহালের সুযোগ আর থাকলো না।