ভারসাম্য যোগাযোগব্যবস্থা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রেলমন্ত্রী

SHARE

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আমরা উন্নত দেশগুলোয় দেখেছি, একটা ভারসাম্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। ’৪৭-এর পরে আমাদের এই অঞ্চলের রেলে খুব একটা ডেভেলপমেন্ট হয়নি। পরে মুক্তিযুদ্ধের সময় রেল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেলের ট্রাক, ব্রিজ, স্টেশন থেকে শুরু করে সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে যে কয়টি উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার মধ্যে একটি ছিল এই রেল। সেটা অনেকখানি তিনি করেও ছিলেন। কিন্তু ’৭৫-এর পরে যে সরকারগুলো এসেছে তারা সড়কে শুধু ডেভেলপ করেছে, রেলে কোনো ডেভেলপ করেনি।

আজ মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রেল ভবনে রেলওয়ের বিভিন্ন সেকশনের অপটিক্যাল ফাইবার লিজ প্রদান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, রেল জনগণের বাহন এবং সরকারের প্রতিষ্ঠান। এই রেল থেকে যত আর্নিং হয় তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারের কোষাগারে জমা হয়। রেল এখনো ভর্তুকি দিয়ে চলছে। এবার আমাদের বাজেট দিয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকার মতো। আর আমরা আর্ন করি বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার মতো। এই দেড় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে আমরা চালাচ্ছি। অনেক সময় আমাদের যে এই আড়াই হাজার কোটি টাকা, সেটাও ইনকাম করতে পারি না।

তিনি বলেন, নন কোর যে রিসোর্স আছে, সেগুলো দিয়ে রেলের আয় বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ রেলের বিভিন্ন মেকানিজম এবং সোর্স থেকে আর্নিংয়ের ব্যবস্থা করে। একেক স্টেশনে আমরা দেখেছি সেখানে বিরাট বিরাট মার্কেট। আমাদের দেশেও সেই সুযোগটি আছে। কিন্তু আমরা এতদিন ব্যবহার করতে পারিনি। এর পেছনে কারণও আছে।

জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ৩ হাজার ২০৫.৬ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার বেজড টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। এই অপটিক্যাল ফাইবারের অবহিত অংশ তিনটি এনটিটিএন লাইসেন্সধারী কোম্পানি এবং দুটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির কাছে পাঁচ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হচ্ছে। সেই হিসাবে বাহন লিমিটেড ২৫টি সেকশনে মোট ১ হাজার ৬৮৩.৯৩ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে। সেখান থেকে পাঁচ বছরের আয় হবে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড ১৩টি সেকশনে মোট ৮৯৫.২১ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে। সেখান থেকে পাঁচ বছরের আয় হবে ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড ৮টি সেকশনে মোট পাঁচ ৫৯৫.৩৯ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে। সেখান থেকে পাঁচ বছরে আয় হবে ২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। রবি আজিয়াটা লিমিটেড পাঁচটি সেকশনে মোট ২৮০.৪৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে। সেখান থেকে পাঁচ বছরে আয় হবে ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেড তিনটি সেকশনে ১৭৭.৮১ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করবে। সেখান থেকে পাঁচ বছরে আয় হবে ৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবির, মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ও পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।