স্যুটকেস ভরে বন্দর ছাড়ল লঙ্কান জাহাজ

SHARE

পদত্যাগের দাবিতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে আশঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের হানার আগেই বাসভবন থেকে পালিয়েছেন গোতাবায়া। দেশটির রাজধানী কলম্বোতে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ করেছেন সারা দেশ থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ। পরে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়েন তারা।

প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ার পর বিক্ষোভকারীরা গোতাবায়ার বিলাসবহুল কক্ষ, কিচেন এবং অন্যান্য স্থানে হানা দিয়েছেন। এ সময় অনেককে প্রেসিডেন্টের বিছানায় শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে দেখা যায়। কিচেনে ঢুকে সেখানকার খাবার খেতেও দেখা যায় তাদের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দু’জন বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের কক্ষের একটি রেফ্রিজারেটর থেকে মদের বোতল বের করে তা পান করছেন। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একদল বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছেন, সেলফি তুলছেন এবং ভিডিও ধারণ করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর দু’টি জাহাজে স্যুইটকেস লোড করা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, জাহাজে তোলা সব স্যুইটকেস প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের। ভিডিওতে তিন ব্যক্তিকে স্যুইটকেসগুলো এসএলএনএস গজবাহু নামের একটি জাহাজে তুলতে দেখা যায়। এ সময় তাদের তাড়াহুড়ো করে দৌড়াতে দেখা যায়।

কলম্বো বন্দরের একজন কর্মকর্তা নিউজও টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, এক দল ব্যক্তি এসএলএনএস সিন্দুরালা এবং এসএলএনএস গজবাহুতে চড়ে বন্দর ত্যাগ করেছেন। তবে জাহাজে চড়ে কারা পালিয়েছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তিনি দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, কলম্বোতে দেশটির সাধারণ জনগণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেওয়ার পরপরই শুক্রবার রাতে বিপদ আঁচ করতে পেরে বাসভবন ছেড়ে সেনাবাহিনীর সদরদফতরে আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।

দেশটির বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেল শনিবার বিকেলের দিকে শ্রীলঙ্কার প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি গাড়িবহর পৌঁছানোর খবর দিয়েছে। এই গাড়িবহর প্রেসিডেন্টের কিনা এবং তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেনি ওই টেলিভিশন চ্যানেল। তবে রাজাপাকসের বর্তমান অবস্থান অজানা এবং বিক্ষোভকারীরা এখনও তার বাসভবন ও সরকারি কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করছেন।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বলে আর কিছু নেই। ফলে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কা খাবার, ওষুধ, জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানি প্রয়োজন মেটাতে পারছে না।

বর্তমান এই দুরাবস্থার জন্য দেশটির অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করছেন। গত মার্চ থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরে।