এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

চলমান বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে শিগগিরই এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার (৬ জুলাই) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় লোডশেডিংই একমাত্র সমাধান।”

“দেশে এবং সারা বিশ্বে চলমান জ্বালানী সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক উপায়ে লোড ব্যবস্থাপনাই পরিস্থিতি মোকাবেলার একমাত্র উপায়,” তিনি যোগ করেন।

“আমেরিকা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, ইউরোপও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর ফলস্বরূপ তেলের দাম বাড়ছে, সারের দাম বাড়ছে, খাদ্যের দাম বাড়ছে, জাহাজের ভাড়া বাড়ছে। সারা বিশ্বে এর প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশও এর দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সব বাধা মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে যেতে হবে।

দেশের অন্যান্য প্রান্তের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাতেও এখন ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে।

বৈশ্বিক তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বেশিরভাগ গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে হয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও বন্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

রাজধানীর বাইরের পরিস্থিতি আরো খারাপ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো ময়মনসিংহ বিভাগে অবস্থিত।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট এবং দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী ও চাঁদপুরেও লোডশেডিং বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর গ্যাস সংকটে ভোগা বিশ্বের দেশগুলোতে বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা বিরল নয়।

বেশিরভাগ দেশই সঠিক উপায়ে লোড ব্যবস্থাপনার দিকে ঝুঁকছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান জ্বালানি সরবরাহের সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত লোড ব্যবস্থাপনা মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পারে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় অন্য কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বিধায় সঠিক পরিমাণে বিদ্যুতের লোড ব্যবস্থাপনাই বর্তমানে গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ কমানোর একমাত্র উপায় বলে মনে করেন তারা।

এদিকে, টেক্সাসে একটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ফ্যাসিলিটি সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ার পর থেকে ইউরোপ এবং এশিয়ায় গ্যাসের দাম কয়েক সপ্তাহে ৬০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

গত বছরের শুরু থেকেই বেড়েছে গ্যাসের দাম, ইউরোপে এই দাম বেড়েছে ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত।

জার্মানিও বলেছে, অচিরেই বিদ্যুৎ ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার মুখোমুখি ইউরোপ।

এরমধ্যে নতুন খবর হলো, জার্মানিতে রাশিয়ান গ্যাস বহনকারী প্রধান নর্ড স্ট্রীম পাইপলাইনটি ১১ জুলাই থেকে ১০ দিনের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বন্ধ করা হবে। মস্কো এই পাইপলাইন আবার নাও খুলতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে এখন।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, সোমবার রাত ৯টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রেকর্ড করা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা মনে করেন, বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানির দাম কমার পর মানুষের চাহিদা মেটানোই বর্তমানে একমাত্র প্রতিকার।