শেষ দফার নির্বাচনেও কেন্দ্র দখল-জাল ভোটের মহোৎসব

SHARE

ঢাকা: শেষ দফার নিরুত্তাপ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার সকাল আটটা থেকে একটানা বিকেল চারটা পর্যন্ত দেশের ১২টি উপজেলায় এ ভোট হয়।বরাবরের মত এ দফাতেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের দাপট লক্ষ্য করা গেছে। কেন্দ্র দখল, বিরোধী এজেন্টদের বের করে জাল ভোট দিয়েছেন তারা।
82723_1
আর ভোটে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে দুটি উপজেলার বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছেন। এই দুটি উপজেলা হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর ও বরগুনার তালতলী।

এদিকে, কুমিল্লা সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর করে ৬শ’ ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া কুমিল্লা আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় কেন্দ্র দখল করে জালভোট দিয়েছেন সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা।

ভোট চলাকালে আদর্শ সদর উপজেলার মাদিগাছি আক্তারুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়, বামইল স্কুল এন্ড কলেজ এবং চায়াগুটান কেন্দ্রে জালভোট দেয়া হয়।

রত্নগাতী আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চেয়ারম্যান প্রতীকের দুটি বই ছিনতাই করে নিয়ে গেছে সরকার দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা।

এদিকে, সিরাজগঞ্জে পুলিশ, বিজিবির পাহারার মধ্যে জাল ভোটের মহোৎসব চলেছে জামতৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এখানে নারী বুথের ভোটারদের বের করে দিয়ে ব্যালটে সিল মেরেছে সরকার দলীয় লোকজন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা গেলে তাদেরও বুথে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

এক পর্যায়ে কামারখন্দের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান ভোটকেন্দ্রে এসে সিল মারা অবস্থায় দুজনকে আটক করে। কিন্তু সরকার দলীয় লোকজন একজনকে ছিনিয়ে নেয়। তবে ফয়সাল নামের অপরজন আটক থাকে।

এ সময় ইউএনও কয়েকটি বুথ থেকে ৬শ’ সিলমারা ব্যালট উদ্ধার করেন। এ সময় সরকার দলীয় কর্মীরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

সিলমারা ব্যালটে দেখা গেছে, সরকার সমর্থিত চেয়ার্যেমান প্রার্থী চৌধুরী আবদুল মতিন চৌধুরীর আনারস প্রতীক, আনিসুর রহমানের টিউবওয়েল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শম্পা রহমানের ফুটবল প্রতীকে সিল মারা ছিল।

প্রিসাইর্ডিং অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, সরকার দলীয় কর্মীদের কাছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয়। ভোটাররা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও আমি নিরুপায়।

উল্লেখ্য, গত ১৬ এপ্রিল শেষ ধাপে ১৪টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী ও নারায়নগঞ্জ বন্দর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

ফলে ১২টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মোট ৬৪ জন, ভাইস-চেয়ারম্যন পদে ৬৯ জন, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন মোট ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ১৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

যেসব উপজেলায় ভোট হচ্ছে
রংপুর সদর, কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, পীরগাছা, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা, বরগুনার তালতলি উপজেলা, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা, গাজীপুর সদর, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিজয়নগর, কুমিল্লার আদর্শ সদর ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা।