মাদক মামলায় হাজিরা দিতে হবে না পরীমনির

SHARE

রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ঢাকাই চিত্রনায়িকা পরীমনি।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালত পরীমনির দেওয়া অবেদন মঞ্জুর করে তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।

গত ১২ মে পরীমনি শারীরিক অসুস্থজনিত কারণে ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ২ জুন ধার্য করেছিলেন। এছাড়া মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্যও একই দিন ধার্য করেন। আজ শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

আজ সকাল ১০টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে হাজিরা দেন পরীমনি। এদিন মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা মজিবর রহমানকে জেরা করেন পরীমনির আইনজীবী। জেরা শেষে আগামী ১৯ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ১২ মে সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে পরীমনি হাজিরা দেন। ওইদিন পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে আদালতে কোনো সাক্ষী উপস্থিত হননি। অন্যদিকে পরীমনির আইনজীবী ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ চেয়ে আবেদন করেন।

এর আগে গত ২৯ মার্চ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে পরীমনি অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী সময়ের আবেদন করেন। এসময় অন্য দুই আসামি আদালতে উপস্থিত হন। এছাড়া আসামিপক্ষের আইনজীবী আপিল ডিভিশনের আবেদনের কপি আদালতে দাখিল করেন। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম সাক্ষ্যগ্রহণের ১২ মে দিন ধার্য করেন।

গত ১ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে মামলার বাদী র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা মজিবর রহমান সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওইদিন মামলার বাদীর জবানবন্দি শেষে পরীমনি ও কবীর হালদারের পক্ষে অ্যাডভোকেট মাজেদুর রহমান মামুন তাকে জেরা করেন। কবীর হালদারের পক্ষে জেরা শেষ হলেও পরীমনির পক্ষে শেষ হয়নি। অন্য আসামি আশরাফুল ইসলাম দিপুর পক্ষে তার আইনজীবী এস এম আক্তারুজ্জামান হিমেল জেরা করেন।

২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি আদালত অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামি পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমনি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।

একই বছরের ৪ আগস্ট অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। তার ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। তার পরদিন গত ৫ আগস্ট র‌্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় দায়ের করে।