সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ১০-২০ তলা ভবন চায়: তথ্যমন্ত্রী

SHARE

দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবণতা এখন সুউচ্চ ভবন নির্মাণ। সেটা প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে। ঢাকা শহরে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান দশ-বিশ তলা ভবন চায়। কেন এতো সুউচ্চ ভবন লাগবে? যেসব প্রতিষ্ঠানের বড় বড় বিল্ডিং আছে, সেগুলো তো ফাঁকা পড়ে আছে। এ প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।

শুক্রবার (১৩ মে) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) বাংলাদেশ কীটতত্ত্ব সমিতির ১১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএআরসির চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।

কৃষিজমি রক্ষার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভূমি আইন না মানার প্রবণতা শুধু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও রয়েছে। প্রয়োজনে সরকারি প্রতিষ্ঠানও সেটা মানে না।

ড. হাছান বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কৃষিজমি রক্ষা করা। যেভাবে প্রতি বছর কৃষিজমি কমছে এতে এ শতাব্দির শেষে বাংলাদেশের আর কোনো কৃষিজমি থাকবে না। এতো দূরেও নয়, ১০ বছর পরের অবস্থা চিন্তা করলে দেখা যাবে, তখন হয়তো আরও ২০ লাখ একর জমি কমে যাবে। কিন্তু ততদিনে আড়াই কোটি মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। তখন কীভাবে এতো মানুষকে আমরা খাওয়াবো?

তিনি বলেন, সেজন্য কোনো জমির মধ্যে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে মনে বাংলাদেশের বুকে পেরেক মারা। কৃষিজমি রক্ষার আইন সবাইকে মানতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আয়তনে একদম ছোট। কিন্তু উৎপাদনে বিস্ময়। যখন দেশে সাড়ে ৭ কোটি লোক ছিল, তখনো খাদ্য ঘাটতি ছিল। এখন মানুষ তিনগুণ বেড়েছে। সে তুলনায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কৃষিজমি কমেছে। এরপরও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছি। আর সেটা সম্ভব হয়েছে দেশের উর্বর ভূমি ও সরকারের প্রচেষ্টার কারণে।

তিনি বলেন, সে অর্জন ধরে রাখতে হবে। এ সরকার কৃষিবান্ধব। বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা কৃষিখাতে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেটা বন্ধ করতে প্রচেষ্টা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এ ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে বলেছিল। কিন্তু সরকার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে কৃষির ভর্তুকির এজেন্ডা নিয়ে কথা বলেছে। সেজন্যই আমরা কৃষিতে এতটা এগিয়েছি।

হাসান মাহমুদ বলেন, আগে আমরা বিভিন্ন দেশের সাহায্যের জন্য তাকিয়ে থাকতাম। এখন অন্য দেশকে সাহায্য দিতে পারি। সম্প্রতি শ্রীলংকাকে আলু দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নেপালে ভূমিকম্পের সময় আমরা তাদের চাল দিয়েছি। ১০-১৫ বছর আগেও কেউ এটা কল্পনা করতে পারেনি।

কীটতত্ত্ববিদদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা ফসলকে পোকামাকড়ের হাতে থেকে বাঁচান। দেশের উৎপাদন বাড়াতে আপনাদের বড় অবদান রয়েছে। তবে কীটনাশক ব্যবহারে আরও সচেতন হোন। কীটনাশকের কারণে অনেক মাছ ও প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। সেটা মাথায় রেখে টেকসই পরিকল্পনা করুন।